সেন্ট যোসেফস্ হাই স্কুল এন্ড কলেজ - এর ইতিকথা
নদ-নদী ভাঙ্গা-গড়া খেলার মত মানব জীবনেও সভ্যতার উদ্ভব, পরিবর্তন এবং পরিবর্তন হয়ে আসছে যা ঐতিহাসিক সত্য। অনাগত দিনের জীবন-জীবিকা, নিরাপত্তা ও উন্নতির স্বার্থে মানব বসতির পরিবর্তন ও পরিবর্ধন আজও চলছে। অনুরূপভাবে দেখা যায়, আমাদের সাভার এলাকার কমলাপুর, ধরেন্ডা, রাজাসন ও দেওগাঁও গ্রামগুলোতে কাথলিক খ্রীষ্টান জনগোষ্ঠীর বসতি স্থাপন শুরু হয় উনিশ শতকের প্রথমার্ধে। এ খ্রীষ্টান জনগোষ্ঠী এসেছে বর্তমান গাজীপুর জেলার অন্তর্গত তুমিলিয়া, দড়িপাড়া, রাঙ্গামাটিয়া, নাগরী ও মঠবাড়ী কাথলিক মিশন এলাকা হতে। ঐ সময়ে এ সাভার অঞ্চল গভীর বন জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। গুরুজনদের মুখে শুনা ও নিজেদের দেখা মতে বন-জঙ্গলে বন্য জীবজন্তু যেমন-বাঘ, শান্তর, ময়ূর, বানর, শুকর, খেকশিয়াল, পাতিশিয়াল, সরীসৃপসহ আরও অনেক প্রকার ছোট জন্তু, রং বেরংয়ের পাখি, বন্য ফল-মূলে সমৃদ্ধ ছিল এ অঞ্চল। যতদূর জানা যায়, তুমিলিয়া মিশনের চড়খোলা গ্রামের পালমা গোষ্ঠীর লোকেরা সর্ব প্রথম সাভারের উত্তর দিকে অবস্থিত কন্ডলবাগ নামক স্থানে বসতি স্থাপন করেছিলেন। গো-খাদ্য হিসাবে জঙ্গলে গামছি লতা সংগ্রহের জন্য রাঙ্গামাটিয়া, তুমিলিয়া, দড়িপাড়া, নাগরী ও মাউসাইদ অঞ্চলের খ্রিষ্টান জনগণ নৌকা যোগে উক্ত কন্ডলবাগ নামক স্থানে এসে উল্লেখিত পালমা বাড়ীতে রাত্রি যাপন করতেন। জানা মতে দড়িপাড়ার স্বর্গীয় দুমেঙ্গু ক্রুশ এবং স্বর্গীয় গাছু বেলী বাঘের তাড়া খেয়ে সমস্ত দিন বড় এক গাছে চড়ে নিজেদের জীবন রক্ষা করেছিলেন। ধরেন্ডা ক্যাথলিক মিশন এলাকার কমলাপুর গ্রামে প্রথম খ্রিষ্টান বসতি আরম্ভ হয়। কমলাপুরের স্বর্গীয় দুমেঙ্গু ক্রুশের বাড়ীর গোয়াল ঘরে প্রথম পাঠশালা আরম্ভ করেন স্বর্গীয় কান্দ্রা পন্ডিত। এরপর লোক বসতি অন্যান্য গ্রামে বিস্তার লাভ করে। স্বর্গীয় মেতু পন্ডিত, আলবেনু পন্ডিত ও উলি পন্ডিত বিভিন্ন সময়ে গাছের তলায়, কারও বাড়ীর আঙ্গিনায় এ চার গ্রামের প্রাথমিক শিক্ষাদানের কাজ চালাতেন। তখনকার সময় স্থানীয় জঙ্গলাকীর্ণ, দুর্গম ও কর্দমাক্ত পথে চলাচল ছিল দুর্বিসহ। ধরেন্ডা কাথলিক মিশনে প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয় ১৯১৬ খ্রীষ্টাব্দে। ধরেন্ডার প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সাভার বাজার এলকায় অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় ব্যতীত ৭/৮ মাইল দূরত্বের মধ্যে সে সময়ে উল্লেখযোগ্য কোন বিদ্যাপীঠ ছিল না। লোক বসতি বৃদ্ধি এবং লেখা পড়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবার কারণে সময়ের প্রয়োজনে এবং কালের প্রবাহে এ অঞ্চলে বিশেষ করে কমলাপুর, শ্যামপুর, ধরেন্ডা, কালিয়াকৈর, রাজাসন, মিটুন, দেওগাঁও ও চাপাইন গ্রামগুলোর জন্য একটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জরুরী প্রয়োজন দেখা দেয়। এ সময়ে খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠিও উল্লেখযোগ্য হারে যায়, বৃদ্ধি পেতে থাকে। কর্দমাক্ত পথ হেঁটে দু’এক স্থানে নৌকায় পারাপার ওগাঁও হয়ে মেয়েদের নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে সাভার বাজার এলাকায় অবস্থিত উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে লেখাপড়া করা কি যে কষ্টকর ছিল তা বর্ণনা দিয়ে বুঝানো যাবে না। এ অঞ্চলের বেশীর ভাগ মানুষের আর্থিক অবস্থা মোটেও ভাল ছিল না। জীবিকার প্রধান বাহন ছিল সামান্য কৃষি কাজ, আম-কাঁঠাল, অন্যান্য ফল, বন জঙ্গলের বাঁশ ও কাঠ বিক্রয় ইত্যাদি। এ সকল পণ্য উল্লেখিত কর্দমাক্ত পথে মাথায় বহন করে নদীর পাড়ে সাভার বাজারে বিক্রয় করতে হতো। অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া অপরাহ্নে কেউ সাভার বাজারে যেতে সাহস পেত না। ধর্মপল্লীর নিকটবর্তী কোন উচ্চ বিদ্যালয় ছিল না বিধায় ধরেন্ডা ধর্মপল্লীর খ্রীষ্টান ছেলে-মেয়েরা বান্দুরা, গোল্লা, নাগরী ও তুমিলিয়া বোর্ডিংয়ে থেকে পড়াশুনা করতো। এতে শুধু যাদের অর্থ-সামর্থ্য ছিল তারাই পড়াশুনার সুযোগ লাভ করত। ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে ধর্মপল্লীর কয়েকজন বিদ্যুৎসাহী সচেতন ব্যক্তি তৎকালীন পাল-পুরোহিত ফাদার লিউ জে, সালিভ্যান, সিএসসি’র অনুমোদন ক্রমে স্থানীয় ধরেন্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয় গৃহে ধর্মপল্লীর প্রতিপালকের নাম অনুযায়ী সেন্ট যোসেফস্ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে ৬ষ্ঠ শ্রেণি খোলার ব্যবস্থা করেন। এ সময় প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন সিস্টার মেরী ফিলোমিনা, এসএমআরএ। তিনি হাই স্কুলের ক্লাস করার জন্য প্রাইমারি স্কুলের একটি রুম ব্যবহার করার অনুমতি দেন। যাঁদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উক্ত বিদ্যালয় খোলা হয় তাঁরা হলেন- স্বর্গীয় এলিক ডি’ রোজারিও, মারিয়ানু কস্তা, মাইকেল কেরু গমেজ, পেদ্র গমেজ, মাইকেল গমেজ (মাষ্টার), যোসেফ মাইরানু পেরেরা, শিমন গায়েন, গ্রাব্রিয়েল কস্তা, যোসেফ কস্তা, ফাদার ফ্রান্সিস গমেজ সীমা, মাইকেল বটলেরু, সিস্টার মেরী ফিলোমিনা এসএমআরএ, নিকোলাস ক্রুশ, আন্তনী গমেজ এবং আরও অনেকে। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে এ এলাকার বিশিষ্ট সমাজকর্মী জনাব মোঃ মজিবুর রহমান ঢাকা জেলা বোর্ডের একজন নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। সেন্ট যোসেফস্ উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য তিনি ঢাকা জেলা বোর্ড হতে কিছু সাহায্য প্রদান করেন। বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই স্বর্গীয় এলিক ডি’ রোজারিও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। সুষ্ঠভাবে বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে মার্চ মাসে দেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। সে সময়ে বিদ্যালয়ে পড়াশুনার খুবই অসুবিধার সৃষ্টি হয়। তবুও সহকারী শিক্ষক অ্যামব্রোজ পালমা, মিসেস বাসন্তী রিবেরু ও মিসেস আগ্রেশ ডি’ রোজারিও বিদ্যালয়ের শিক্ষা কাজ চালিয়ে যান। বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী, নিজস্ব গৃহ না থাকায় সরকারি অনুমোদন লাভ করা তখন সম্ভব ছিল না। এ জন্য সর্বদা বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি ও গৃহনির্মাণ এবং ছাত্র-ছাত্রী বৃদ্ধি করার আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হয়। এ সময় স্বর্গীয় এলিক ডি’ রোজারিও, মারিয়ানু কস্তা, শিমন গায়েন, মাইকেল কেরু গমেজ, মাইকেল গমেজ (মাষ্টার), পেন্দ্র গমেজ, যোসেফ মাইরানু পেরেরা, নিকোলাস ক্রুশ (মেম্বার), যোসেফ কস্তা ও মাইকেল বটলেরু’র সহায়তায় রাজাসন গ্রাম নিবাসী স্বর্গীয় মার্কাস কাফু গমেজের নিকট হতে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ২৬ শতাংশ জমি দান হিসেবে ও তৎকালীন আর্চবিশপ থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলী, সিএসসি’র অনুমোদন ও সহযোগিতায় সাড়ে ২৩ শতাংশ জমি ক্রয় করে নেয়া হয়। সে সাথে ধর্মপল্লীর মিশন সমিতির আর্থিক সহায়তায় একটি দুই কক্ষ বিশিষ্ট টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়। একটি পূর্ণাঙ্গ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে তখন সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ১.৫০ একর জমি, ছয় কক্ষ বিশিষ্ট টিনের ঘর ও অন্ততঃ ১৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী প্রয়োজন। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের পরম শ্রদ্ধেয় আর্চবিশপ টি, এ, গাঙ্গুলী মহোদয়ের নিকট আমাদের বিদ্যালয়ের জন্য জমি ক্রয়ের আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করলে তিনি বিদ্যালয়ের জমি ক্রয়ের জন্য রাজি হন এ শর্তে যে, অর্ধেক টাকা স্থানীয় জনগণ সংগ্রহ করবেন আর বাকী অর্ধেক টাকা তিনি দেবেন। এ শর্তে রাজি হয়ে রাজাসন গ্রাম-নিবাসী স্বর্গীয় মার্কাস কাফু গমেজের দানকৃত জমি সংলগ্ন তারই ছোট ভাই মদন যোসেফ গমেজ ১৩ শতাংশ জমি দান বাবদ ও ৯৮ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নিকট বিক্রি করেন। অবশ্য পরবর্তীতে পুষ্প রড্রিক্স ২৬ ও বাসন্তী গমেজের নিকট হতে ২৬ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়েছিল। যেহেতু উক্ত জমিগুলো নীচু ছিল তাই স্বর্গীয় আর্চবিশপ টি.এ. গাঙ্গুলী মাটি ভরাট করার সমস্ত ব্যয়ভার বহন করেছিলেন। বিদ্যালয় গৃহ নির্মাণের জন্য তৎকালীন ঢাকা সদর উত্তর মহকুমা অফিসার জনাব ইকবাল শাহরিয়া সাহেবের শরণাপন্ন হলে তিনি যেহেতু নটরডেম কলেজের ছাত্র ছিলেন ও আর্চবিশপ টি.এ. গাঙ্গুলী তার সময়ে অধ্যাপক ছিলেন তাই তিনি আর্চবিশপ মহোদয়ের সুপারিশ পত্রসহ আবেদন করার পরামর্শ দেন। পরে সুপারিশসহ মহকুমা অফিসার জনাব ইকবাল শাহরিয়া সাহেবের নিকট আবেদন দাখিল করলে তিনি সেন্ট যোসেফস্ উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য ২৫ (পঁচিশ) বান্ডেল ঢেউটিন বরাদ্দ দেন ও বিদ্যালয় গৃহ নির্মাণের খরচের জন্যে কিছু থান কাপড়-সার্ট, ফ্রক ইত্যাদি তৈর করে জমা দেওয়ার পর মজুরী বাবাদ কিছু আর্থিক সাহায্য প্রদান করেন। তাঁর দানকৃত রিলিফের টিন ও আর্থিক সাহায্যের দ্বারা ঐ সময়ের টিনের ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই মূহুর্তে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি স্বর্গীয় পেন্দ্র গমেজকে যাঁর ঐকান্তিক সহযোগিতায় এ বিদ্যালয়ের গৃহ নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছিল। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী বৃদ্ধির ব্যাপারে স্বর্গীয় এলিক ডি’ রোজারিও, মাইকেল লেরু গমেজ ও আরো অনেকে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে শিক্ষা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রী সংগ্রহের কাজ করার পর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক স্মারক নং আইআর ১৫২ (নতুন) ১১৫৩, তাং ২২/১/৭৪ আদেশ বলে ১/১/৭৩ তারিখ হতে আমাদের বিদ্যালয়টি সরকারি স্বীকৃতি লাভ করে। তৎকালীন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বেতনে স্কুল পরিচালনার খরচ বহন করা কোনভাবেই সম্ভব ছিল না। তাই স্কুল পরিচালনা কমিটিকে ভীষণ সমস্যায় পড়তে হয়। এ সময় তৎকালীন স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য স্বর্গীয় খ্রীষ্টফার গমেজ স্কুল ফান্ডে আর্থিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। তিনি রাঙ্গামাটিয়া ধর্মপল্লীর বড় সাতানী পাড়া গ্রামের সন্তান হলেও তখন তিনি ধরেন্ডা ধর্মপল্লীর কমলাপুর গ্রামে জমি ক্রয়পূর্বক বাড়ী নির্মাণ করে বসবাস করতেন। তাঁর আর্থিক অনুদান না পেলে সে সময় বিদ্যালয়ের কার্যক্রম হয়তো অচল হয়ে পরতো। অতঃপর ১৯৭৩ সন হতে স্কুলটি পূর্ণাঙ্গ উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের প্রথমার্ধে স্বর্গীয় ফ্রান্সিস রিবেরু প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। এ সময়ে স্কুলে শিক্ষাদানে সার্বিক উন্নতি ও অগ্রগতি সাধিত হয়। পুরাতন টিনের বিদ্যালয় গৃহে ছাত্র-ছাত্রীদের স্থান সংকুলান না হওয়াতে ধরেন্ডা ধর্মপল্লীর তৎকালীন পাল-পুরোহিত ফাদার পরিমল ফ্রান্সিস পেরেরা, সিএসসি তিন কক্ষ বিশিষ্ট আধা পাকা বিদ্যালয় গৃহটি নির্মাণ কাজে সহায়তা করেন। অপর পক্ষে, তখনকার সময়ে স্থানীয় কোন উৎসাহী শিক্ষিত লোক পাওয়া সম্ভব ছিল না যে আমাদের বিদ্যালয়ে কম বেতনে শিক্ষকতার কাজ করতে পারেন। তাই দূর দূরান্ত থেকে অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয়েছিল। আজ আমরা খুবই আনন্দিত ও গর্বিত যে, সে সময়কার নিয়োগকৃত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টার ফলে এ বিদ্যালয় থেকে অনেক ছাত্রছাত্রী পাশ করে ও পরবর্তীতে বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা লাভ করে আজ তারা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসে, ব্যাংকে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে বহাল হয়ে সুনামের সাথে কাজ করছেন। অনেকে আবার দক্ষতার সাথে আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার দায়িত্ব নিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রাখছেন। আমাদের বিদ্যালয় আরো উন্নতির জন্য প্রেরিতগণের রাণী মারীয়া সঙ্গিনী সংঘের (এসএমআরএ) কর্তৃপক্ষের নিকট প্রধান শিক্ষিকা দায়িত্ব পরিচালনা করার আবেদন করলে তা মঞ্জুর করা হয় ও আগষ্ট ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দ হতে প্রথম প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে সিস্টা মেরী রুথ, এসএমআরএ যোগদান করেন। অদ্যাবধি এ সংঘে সিস্টারগণ বিদ্যালয়টির পরিচালনার দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন করছেন।
প্রতিষ্ঠাকাল হতে অদ্যাবধি কর্মরত প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের না নিম্নে উল্লেখ করা হল-
১। স্বর্গীয় এলিক ডি’ রোজারিও- ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দ
২। স্বর্গীয় আমব্রোস পালমা- ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ
৩। স্বর্গীয় ডানিয়েল বিশ্বাস- ১৯৭১-১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দ
৪। স্বর্গীয় ফ্রান্সিস রিবেরু- ১৯৭৪-১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দ
৫। মিঃ ফ্রান্সিস ডি’ কন্তা- ১৯৭৭-১৯৮১ খ্রিস্টাব্দ
৬। স্বর্গীয় সিস্টার মেরী রুথ, এসএমআরএ- ১৯৮১-১৯৮৭খ্রিস্টাব্দ
৭। সিস্টার মেরী দীপিকা, এসএমআরএ- ১৯৮৮- ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দ
৮। সিস্টার মেরী তারা, এসএমআরএ-১৯৯১-১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দ
৯। স্বর্গীয় সিস্টার মেরী জ্যোতি, এসএমআরএ- ১৯৯৩-২০০১ খ্রিস্টাব্দ
১০। সিস্টার মেরী নমিতা, এসএমআরএ- ২০০১ খ্রিস্টাব্দ থেকে অদ্যাবধি।
উল্লেখিত নিবেদিত প্রাণ প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিকট ধরেন্ডা ধর্মপল্লীবাসী তথা এ এলাকার জনগণ খুবই কৃতজ্ঞ। তাঁদের ও অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের ঐকান্তিক চেষ্টায় আমাদের বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ছাত্র-ছাত্রীরা কৃতিত্বের সাথে পাশ করছে ও বর্তমানে প্রায় ১৪৭৫ জন ছাত্র-ছাত্রী পড়াশনা করছে। প্রয়োজন এবং এলাকার মানুষের তাগিদ বোধ থেকে প্রিয় সেন্ট যোসেফস্ উচ্চ বিদ্যালয়টিকে উন্নীত করে সেন্ট যোসেফস্ হাইস্কুল এন্ড কলেজে রূপান্তর করা হয়েছে। ২০১৫ জুলাই হতে কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে ২২ আগষ্ট সালে মহামান্য আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি’ রোজারিও পসি (বর্তমান কার্ডিনাল) সেন্ট যোসেফস্ হাই স্কুল এন্ড কলেজের আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় গভর্নিং বডির ছিলেন রেভা: ফাদার কমল কোড়াইয়া এবং অধ্যক্ষ সিস্টার মেরী নমিতা, এসএমআরএ। বর্তমানে কলেজে ২৬০ জন ছাত্রী করছে। স্থানীয় অনুদানে বিদ্যালয়ে নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। এই মহৎ কাজে অনেক উদার ব্যক্তি, ধরেন্ডা ক্রেডিট ও দাতা সংস্থা এগিয়ে এসেছিলেন তাদের সকলের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।